শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে রবি’র ডাটা সেন্টারে প্রচীর নির্মাণ কাজে নিয়োজিত এক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ৭ লাখ টাকার মালামাল আত্মসাৎ করা হয়েছে। পার্কের দেখভালে নিয়োজিত টেকসিটি বাংলাদেশ কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার-জিএম মোসলেম উদ্দিন শিকদারের বিরুদ্ধে এ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
জিএম শিকদারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি।
বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষের নিকট গত ৩ নভেম্বর এ সংক্রান্ত লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। অভিযোগে বলা হয়েছে, যশোরের শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের পশ্চিম পাশে মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর কোম্পানি রবি’র ডাটা সেন্টার তৈরির কাজ চলছে। ডাটা সেন্টারের এরিয়াতে প্রাচীর নির্মাণসহ বেশ কিছু কাজ করছে মণিরামপুরের হিরা কনস্ট্রাকশন নামে এ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি। তারা এ বছরের শুরুতে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটির টেন্ডারে ১৯৪ ফিট প্রাচীর, ১শ’৪৪ মিটার পাকা রাস্তা, ১শ’ ৫০ মিটার ড্রেন, একটি গেট, সিকিউরিটি ভবনসহ অন্যান্য কাজ মিলিয়ে ২ কোটি ৮৪ লাখ টাকার কাজ পায় হিরা কনস্ট্রাকশন।
চলতি বছরের এপ্রিলের দিকে তারা এখানে কাজ করতে মালামাল নিয়ে আসে। পার্কের পূর্বপাশের একটি ভবনের (আনছার আবাসিক ভবন) নিচতলায় তাদের মালামাল রাখে। এ রুমে মালামাল রাখতে তাদের একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে হয় টেকসিটি বাংলাদেশের জিএম মোসলেম উদ্দিন শিকদারের নিকট। তারপর তিনি ওই রুমের তালা খুলে দেন মালামাল রাখার জন্য। এসময় ওই রুমের একটি চাবি জিএম তার কাছেও সংরক্ষণ করেন। এপ্রিল মাস থেকেই মালামাল ওই রুমেই রাখতেন বলে জানায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।
এদিকে অক্টোবরের শুরুর দিকে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাব-কন্টাক্টর তারেক হোসেন মালামাল রাখা রুম খুলে দেখতে পান তাদের কোন মালামাল নেই। এ রুমে ৫ হাজার কেজি লোহার রড, ২৫শ’ ফুট লোহার তারকাটা ও ৩৫ পিস লোহার এ্যাঙ্গেল ছিল। তারা বলছেন, ৫ হাজার কেজি লোহার রডের মূল্য ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা, তারকাটা, এ্যাঙ্গেল ও অন্যান্য মিলে আরও ২ লাখ টাকার মালামাল ছিল বলে জানান তারেক হোসেন।
তিনি আরও বলেন, তার এই মালামাল খুঁজে না পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই পার্কের টেকসিটি বাংলাদেশ লিমিটেডের (প্রোপার্টি ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি-পিএমসি) জেনারেল ম্যানেজার মোসলেম উদ্দিন শিকদারের কাছে গিয়ে মৌখিক অভিযোগ করেন। পরে তিনি জানতে পারেন মোসলেম উদ্দিন বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটির নিয়োগকৃত পিওন অনুপ কুমার বিশ্বাস ও তার কয়েকজন সহকারী সহযোগিতা নিয়ে রুমে থাকা মালামাল গোপনে বিক্রি করে দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, জিএম-এর কাছেও ওই রুমের চাবি ছিল, সব মালামাল তিনিই সরিয়ে বিক্রি করে দিয়েছেন বলে দাবি করেন।
এ ব্যাপারে টেকসিটি বাংলাদেশের জেনারেল ম্যানেজার-জিএম মোসলেম উদ্দিন শিকদার বলেন, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তিন মাস আগে ঠিকাদার তাদের কাজ শেষ করেছে। গত ২৬ অক্টোবর তাদের কাছে থাকা চাবি দিয়ে রুম খুলে সেখানে কয়েকটা কাঠের তক্তা ছাড়া কিছুই পাওয়া যায়নি। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা তার বললে তিনি কি কি মালামাল হারিয়েছেন লিখিতভাবে দিতে বলেন। কিন্তু এখনও অবধি তার কাছে কোন লিখিত অভিযোগ করেননি বলে মন্তব্য তার।
এদিকে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটির নিয়োগকৃত পিওন অনুপ কুমার বিশ্বাস বলেন, তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না। জিএম করেছে কিনা তাও জানেন না বলে মন্তব্য তার।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাব-কন্টাক্টর তারেক হোসেন বলেন, সুষ্ঠু তদন্ত ও মালামাল ফেরতের জন্য বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক ইনভেস্টর এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শাহ জালাল বলেন, রড চুরির ব্যাপারটা তাদের কানে এসেছে। তবে কে বা কারা চুরি করেছে তা তারা জানেন না বলে মন্তব্য করেন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।